সৌদির পবিত্র নগরীতে কনসার্ট আয়োজন: মুসল্লিদের ক্ষোভ ও সমালোচনা

সম্প্রতি সৌদির জেদ্দায় কনসার্টে মঞ্চ মাতিয়েছেন মার্কিন পপ তারকা জেনিফার লোপেজ। গত সপ্তাহে জেদ্দায় ‘সৌদি অ্যারাবিয়ান গ্র্যান্ড প্রিক্স’ প্রতিযোগিতা উপলক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এই কনসার্টেই বেঁধেছে বিপত্তি। মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে পবিত্র নগরী মক্কা থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে কনসার্টের আয়োজন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা।

এ প্রসঙ্গে গত ২১ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরব সূত্রে জানা যায়, এই কনসার্টটি সৌদির ভিশন ২০৩০ এর অংশ ছিল। সৌদি তাদের বিনোদন ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনতে কাজ করছে। ফলে বিভিন্ন সময় বাইরে থেকে শিল্পীরা এসে সৌদিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন।

এই নতুন পরিবর্তন যখন মুসলিম বিশ্বের কানে পৌঁছায়, তখন স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। কারণ, মক্কা-মদিনা — এই নামগুলো কেবল শহর নয়, কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন। এই পবিত্র ভূমিতে সাংস্কৃতিক উৎসব বা কনসার্ট আয়োজন তাদের কাছে ধর্মীয় অনুভূতির পরিপন্থী মনে হয়েছে।

ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বেগ
অনেক আলেম, স্কলার ও সাধারণ মুসল্লিরা প্রশ্ন তুলছেন:
পবিত্র নগরীগুলোর আভিজাত্য, নীরবতা আর ইবাদতের পরিবেশ কি এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে?
কনসার্টের হইচই আর সংগীতের শব্দ কি সেই পবিত্রতা ভঙ্গ করছে না?

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
বিশেষ করে টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকে হাজার হাজার মুসলিম এই আয়োজনের বিরুদ্ধে কণ্ঠ তুলেছেন।
কেউ বলেছেন, “পবিত্র ভূমি শুধুই ইবাদতের জন্য, এখানে কোনো ধরণের বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড বরদাশতযোগ্য নয়।”
আরও অনেকে বলেছেন, “ভিশন ২০৩০-এর উন্নয়ন আমরা চাই, তবে তা যেন ধর্মীয় মর্যাদার সাথে সাংঘর্ষিক না হয়।”

সৌদি সরকারের অবস্থান
সৌদি সরকার জানিয়েছে, তারা বৈচিত্র্যময় অর্থনীতির জন্য বিকল্প খাত গড়ে তুলতে বাধ্য হচ্ছে। বিশ্ব পর্যটন বাজারে নিজেদের জায়গা করে নিতে সৌদি আরব সাংস্কৃতিক ও বিনোদন সেক্টরে বিনিয়োগ করছে। তবে সরকারের দাবি, তারা নীতিমালার মধ্যে থেকে সবকিছু করছে, এবং পবিত্র নগরীগুলোর মূল সীমানা রক্ষা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *