
বাংলাদেশের ফ্যাশন ও গ্ল্যামার দুনিয়ার পরিচিত নাম মেঘনা আলম। মিস আর্থ বাংলাদেশ হিসেবে আলোচনায় আসা এই মডেল হঠাৎ করেই এখন আলোচনায় একেবারে ভিন্ন কারণে—প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার। যে নারীকে একসময় ক্যামেরার সামনে পাওয়া যেত র্যাম্পে হাঁটতে কিংবা শিরোনামে সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে, এখন তাকেই দেখা যাচ্ছে আদালতের কাঠগড়ায়।
কী অভিযোগ তার বিরুদ্ধে?
ঢাকার ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা এক মামলায় বলা হয়েছে, মেঘনা আলম ও তার সহযোগীরা প্রভাবশালী বিদেশি নাগরিকদের, বিশেষ করে রাষ্ট্রদূতদের টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করতেন।
এ ধরনের এক ঘটনায়, সৌদি আরবের সাবেক রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ ডলার আদায়ের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ উঠে।
গ্রেপ্তারের পেছনের ঘটনা
১৭ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া মেঘনা আলমকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
এর আগে ১০ এপ্রিল তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের জন্য আটকাদেশে রাখা হয়েছিল।
আদালতের সিদ্ধান্ত ও তদন্ত
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে জানান, মেঘনার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষও তার গ্রেপ্তার সমর্থন করে। পরবর্তীতে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার কার্যকর করার নির্দেশ দেন।
তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, মেঘনা একজন সংগঠিত প্রতারক চক্রের অন্যতম মুখ হতে পারেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে ধনী ও বিদেশি ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে আসছিল।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় মিডিয়ায় ও সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, গ্ল্যামার দুনিয়ায় বহিরঙ্গে যারা ঝলমলে, অন্তরালে তাদের জীবন কতটা অন্ধকারে ঢাকা, মেঘনার ঘটনা তার জ্বলন্ত উদাহরণ।
তবে এখনো অনেকেই আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
মডেল মেঘনা আলমের এই ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, চমকপ্রদ পরিচিতি ও ফেমের আড়ালে অনেক সময় ভয়াবহ বাস্তবতা লুকিয়ে থাকতে পারে। আমরা চাই, তদন্ত স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হোক, দোষী প্রমাণিত হলে তার যথাযথ শাস্তি হোক। একইসাথে, বিনা দোষে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়—এটাও নিশ্চিত করা জরুরি।