
বিশ্বে ফেসবুক ও ইউটিউব আজ কেবল সামাজিক যোগাযোগ বা বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং এগুলো হয়ে উঠেছে মত প্রকাশ, শিক্ষাদান ও ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু। তবে এসব বিদেশি প্ল্যাটফর্মে অনৈতিক কনটেন্ট, গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শঙ্কা সব সময় থেকেই গেছে। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ নিজের প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের পথে এগোচ্ছে—যার লক্ষ্য, একটি নিরাপদ, নৈতিক ও স্বাধীন ডিজিটাল জগৎ গড়ে তোলা।
হিকমাহ – বাংলাদেশের নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম
ফেসবুকের বিকল্প হিসেবে তৈরি হওয়া হিকমাহ হচ্ছে একটি নৈতিক ও নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম। এর মূল বৈশিষ্ট্য:
ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য দেশের ভেতরে সংরক্ষণ।
ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ বজায় রেখে কনটেন্ট ফিল্টারিং।
গুজব ও অশালীনতা রোধে কড়াকড়ি নজরদারি।
মাহফিল – নৈতিক ভিডিও প্ল্যাটফর্ম
ইউটিউবের বিকল্প মাহফিল মূলত ইসলামিক দাওয়াহ, শিক্ষামূলক কনটেন্ট এবং শিশুদের জন্য নিরাপদ ভিডিওর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। এতে:
কোনো অশ্লীলতা বা সহিংস কনটেন্ট পাওয়া যায় না।
সৃজনশীল ও জ্ঞানভিত্তিক ভিডিওকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
শিশু ও পরিবারবান্ধব নীতিমালার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হয়।
কাহফ কিডজ – শিশুবান্ধব ডিজিটাল জগৎ
শিশুদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা একটি প্ল্যাটফর্ম ‘কাহফ কিডজ’, যেখানে:
অনুপযুক্ত কনটেন্ট প্রবেশাধিকার নেই।
কার্টুন, গল্প ও শিক্ষামূলক গেমে ভরপুর একটি নিরাপদ পরিবেশ।
শিশুদের মানসিক গঠন ও নৈতিকতা বিকাশে সহায়ক।
দেশীয় প্ল্যাটফর্ম কেন প্রয়োজন?
তথ্য নিরাপত্তা: বিদেশি সার্ভারে তথ্য সংরক্ষণ রোধ।
নৈতিকতা রক্ষা: দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধকে অগ্রাধিকার।
চাকরি ও উদ্ভাবন: তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন প্রযুক্তিভিত্তিক সুযোগ সৃষ্টি।
চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যতের দিক
এখনও এই প্ল্যাটফর্মগুলো বড় পরিসরে পৌঁছায়নি। তবে সরকারি সহযোগিতা, গণসচেতনতা ও প্রযুক্তি উন্নয়ন অব্যাহত থাকলে এগুলো ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশের এই উদ্যোগ শুধু প্রযুক্তিগত স্বাধীনতার ইঙ্গিতই দেয় না, এটি আমাদের আত্মপরিচয়েরও প্রতিফলন। নিরাপদ, মূল্যবোধভিত্তিক ও স্বাধীন ডিজিটাল ভবিষ্যতের পথে দেশের এ অগ্রগতি নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।