
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে মালদ্বীপ একটি সাহসী পদক্ষেপ নেয়। গাজায় ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে তারা ইসরায়েলি নাগরিকদের নিজেদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আইনি সিদ্ধান্তের পেছনের প্রেক্ষাপট
মালদ্বীপের সংসদে একটি সংশোধনী বিল পাস করে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়। প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু এতে অনুমোদন দেন। এই আইনের মাধ্যমে ইসরায়েলি পাসপোর্টধারীরা আর মালদ্বীপে প্রবেশ করতে পারবেন না।
তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে—যেসব ব্যক্তি দ্বৈত নাগরিক এবং ইসরায়েল ছাড়া অন্য কোনো দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করেন, তারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন না।
ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি
মালদ্বীপ সরকার জানায়, এই নিষেধাজ্ঞা মূলত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ এবং গাজার জনগণের ওপর চালানো নির্মমতা বন্ধের দাবিতে। তারা আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুক্ত হওয়ার আগ্রহও প্রকাশ করেছে।
অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার
মালদ্বীপ পর্যটননির্ভর দেশ হলেও ইসরায়েলি পর্যটকদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ৫৯ জন ইসরায়েলি মালদ্বীপে প্রবেশ করেন। ফলে এই নিষেধাজ্ঞার কারণে বড় ধরনের আর্থিক প্রভাব পড়বে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েল এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং তাদের নাগরিকদের মালদ্বীপ সফর না করার পরামর্শ দিয়েছে। যারা মালদ্বীপে অবস্থান করছেন, তাদের দ্রুত দেশে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই পদক্ষেপ মালদ্বীপের রাজনৈতিক অবস্থানের একটি স্পষ্ট ঘোষণা—মানবাধিকারের প্রশ্নে তারা আপস করতে রাজি নয়। ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়ে তারা মুসলিম বিশ্ব ও মানবতা রক্ষার কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করছে।