পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পরমাণু দুর্ঘটনার করুণ ইতিহাস

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনার নাম চেরনোবিল। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনা শুধু তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন নয়, বরং গোটা পৃথিবীর জন্য এক জাগরণঘণ্টা ছিল। আজো তার প্রভাব মানবজাতি বহন করছে।

চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে মোট চারটি রিঅ্যাক্টর ছিল। ২৬ এপ্রিল রাতে চতুর্থ রিঅ্যাক্টরে একটি নিরাপত্তা পরীক্ষা চালানো হচ্ছিল। এটি মূলত একটি সংকটকালীন কুলিং সিস্টেম কার্যকরভাবে কাজ করে কি না, তা যাচাইয়ের জন্য করা হচ্ছিল।

ভুল সিদ্ধান্ত, কারিগরি ত্রুটি এবং অনভিজ্ঞতা—এই তিনের সমন্বয়ে রিঅ্যাক্টরটি বিস্ফোরিত হয়। এতে বিশাল পরিমাণ তেজস্ক্রিয় পদার্থ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।দুর্ঘটনার সময় দুইজন কর্মী তাৎক্ষণিকভাবে নিহত হন।

পরবর্তীতে দমকল কর্মীসহ আরও অনেকে তীব্র বিকিরণে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

WHO অনুযায়ী, এই দুর্ঘটনার কারণে প্রায় ৪,০০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে।

তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে ইউক্রেন, বেলারুশ, রাশিয়া এবং ইউরোপের একাংশেও।

প্রিপিয়াত শহরের ৫০,০০০ মানুষকে রাতারাতি সরিয়ে নেওয়া হয়।

ধীরে ধীরে ৩,৫০,০০০ এরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়।

তেজস্ক্রিয়তার কারণে বহু শিশু থাইরয়েড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।

বহু জমি আজও কৃষিকাজ ও বাসযোগ্যতার জন্য অযোগ্য।

বর্তমানে চেরনোবিল একটি পর্যটন গন্তব্য হলেও, নির্দিষ্ট কিছু এলাকা আজও প্রবেশযোগ্য নয়।
২০১৬ সালে একটি স্টিলের কন্টেইনমেন্ট স্ট্রাকচার তৈরি করে রিঅ্যাক্টর ৪ ঘিরে ফেলা হয়, যাতে তেজস্ক্রিয়তা আর ছড়াতে না পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *