20 Apr 2025, Sun

যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি: এ বিষয়ে ইসলাম কি বলে?

বাংলাদেশে যৌনকর্মীদের নিয়ে বরাবরই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও সামাজিক অবহেলার চিত্র আমরা দেখে আসছি। তারা সমাজের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ হলেও অধিকাংশ সময়েই থাকেন অন্ধকারে, আইনি সুরক্ষা ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত। এই বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন ২০২৫ সালে একটি সাহসী প্রস্তাব দিয়েছে—যৌনকর্মীদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার।


এই প্রস্তাবের মানে কী?

এই সুপারিশ মানে হলো—
যৌনকর্মীরা তাদের কাজকে একটি পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন,
আর তার সাথে মিলবে আইনি অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং শ্রমিক মর্যাদা।

যেভাবে গার্মেন্টস কর্মী, গৃহকর্মী, কারখানার শ্রমিকদের অধিকার রয়েছে,
ঠিক একইভাবে যৌনকর্মীরাও শ্রমিক হিসেবে আইনের আওতায় আসবেন।

. ইসলাম যৌনকর্ম বা ব্যভিচারকে স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষণা করেছে

ইসলামে যৌন সম্পর্ক শুধু বৈধ বিবাহের মাধ্যমে অনুমোদিত।
ব্যভিচার (জিনা) করা ইসলাম ধর্মে একটি মেজর কবিরা গুনাহ।
কুরআন ও হাদীসে একাধিকবার বলা হয়েছে:

“তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হইও না। নিশ্চয়ই এটি অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট পথ।”
— (সূরা ইসরা: ৩২)


২. যৌনকর্মীদের প্রতি আচরণ কেমন হওয়া উচিত?

ইসলাম অপরাধকে ঘৃণা করে, কিন্তু অপরাধীকেও ফেরার সুযোগ দেয়।
একজন যৌনকর্মী গুনাহগার হলেও, সে মানুষ এবং আল্লাহর বান্দা—এটা ইসলাম কখনো অস্বীকার করে না।

একটি বিখ্যাত হাদীসে আছে:

“একবার এক ব্যভিচারিণী মহিলা একটি কুকুরকে পানি পান করিয়ে দেয়। আল্লাহ তাতে সন্তুষ্ট হয়ে তাকে ক্ষমা করে দেন।”
— (সহীহ বুখারী)

এই হাদীস প্রমাণ করে, মানবিক গুণাবলি ও তওবার দরজা সকলের জন্য উন্মুক্ত, এমনকি গুনাহগারদের জন্যও।


৩. সমাজ ও রাষ্ট্রের ভূমিকা কী হওয়া উচিত ইসলামি দৃষ্টিতে?

ইসলামী সমাজে ব্যভিচার প্রতিরোধের জন্য:

নৈতিক শিক্ষার প্রসার

বিয়ে সহজ করা

অশ্লীলতা বন্ধ করা

অসচ্ছল নারীদের সাহায্য করা

আল্লাহ বলেন:

“তাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে…”
— (সূরা নূর: ৩৩)

অর্থাৎ, বিকল্প পেশা বা উপায় না থাকলে অনেকে জিনার পথে যেতে পারে, এজন্য ইসলামে আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের জোর নির্দেশ রয়েছে।


৪. ইসলাম কি যৌনকর্মীদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বলে?

না। ইসলাম কখনোই যৌনকর্মকে বৈধ বা পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না।
তবে যারা এই পেশায় আছে, তাদের ঘৃণা না করে সহানুভূতির সঙ্গে সত্য পথে ফিরিয়ে আনাই ইসলামি মূল্যবোধের অংশ।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *