
আজ ২০ এপ্রিল ২০২৫, সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ চত্বরে ঘটে গেল এক দুঃখজনক ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা। নিজেদের অধিকার ও ন্যায্য দাবির পক্ষে রাস্তায় নেমেছিলেন ভবিষ্যতের চিকিৎসকেরা—যারা আজ আহত, অপমানিত এবং আতঙ্কিত।
দাবি কী ছিল?
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন অব্যবস্থাপনায়। কলেজে পর্যাপ্ত ওয়ার্ড নেই, নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম, হাসপাতালের কার্যক্রম এখনো পূর্ণভাবে চালু হয়নি। ক্লাসরুম সংকট, থাকার ব্যবস্থা ও প্র্যাকটিকাল শিক্ষার অভাবে শিক্ষার্থীরা কার্যত হতাশ।
এই অবস্থায় তারা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবিগুলো নিয়ে আজ সকালে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে।
কীভাবে শুরু হলো সহিংসতা?
সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা মদনপুর এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান নেয়। এ সময় দুপাশে যানজট তৈরি হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে চায়।
কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা না ছাড়ার ঘোষণা দিলে, সেনাবাহিনী লাঠিচার্জ শুরু করে। লাঠির আঘাতে বহু শিক্ষার্থী আহত হন এবং ছত্রভঙ্গ হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
ক্যাম্পাসে গিয়েও মারধর?
সবচেয়ে উদ্বেগজনক অভিযোগটি এসেছে এরপর। শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন—রাস্তায় সরিয়ে দেওয়ার পরও সেনাসদস্যরা কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে তাদের মারধর করে। মেয়েদের উপরও লাঠিচার্জ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সেনাবাহিনীর বক্তব্য কী?
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা শুধু সড়ক চলাচল স্বাভাবিক করতেই শিক্ষার্থীদের সরে যেতে বলেছিলেন। এবং পরিস্থিতি এখন ‘নিয়ন্ত্রণে’ বলে দাবি করা হয়েছে। তবে এই ব্যাখ্যা শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ কমাতে পারেনি।
জনমত ও প্রতিক্রিয়া
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন—একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। অনেকে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের জবাবদিহিতার দাবি জানাচ্ছেন।