
একটি সকাল। চারপাশে ছাত্রছাত্রীদের চেনা কোলাহল। কেউ ইউনিফর্ম গুছিয়ে নিচ্ছে, কেউ প্রশ্নপত্র নিয়ে জল্পনা–কল্পনা করছে। এর মধ্যেই হঠাৎ নজর কাড়ে এক দৃশ্য—মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে একজন কিশোর। পেছনে নেই বাবা-মা, নেই কোনো হুইলচেয়ার। শুধু দু’টি হাত আর বুকের সাহসে সামনে এগিয়ে আসছে সে। নাম তার ইউনুস।
Most Viewed Posts
- বর্তমানে ভিক্ষুকের ইনকাম এর পরিমাণ অনেক চাকরিজীবীকেও পেছনে ফেলে দেয়।সরকারি পুনর্বাসন উদ্যোগ সরকার ভিক্ষাবৃত্তি কমাতে বিভিন্ন পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫৮টি জেলায়…
- অতিরিক্ত টাকা না দেওয়ায় ২০২৫ সালে পরীক্ষায় বসতে পারলেন না অনেক শিক্ষার্থীঅতিরিক্ত টাকা না দেওয়ায় ২০২৫ সালে পরীক্ষায় বসতে পারলেন না অনেক শিক্ষার্থী২০২৫ সালে এসএসসি ও…
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার একটি গ্রামের ছেলে ইউনুস, শারীরিক প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকেই তার দুই পায়ে সমস্যা, হাঁটতে পারেন না। কিন্তু তার ভিতরের শক্তি, স্বপ্ন আর জেদের কাছে এই প্রতিবন্ধকতা এক বিন্দুও হার মানেনি। তিনি এসএসসি ২০২৫ সালের পরীক্ষার্থী। প্রতিদিন সকাল হলেই হামাগুড়ি দিয়ে নিজেই বাড়ি থেকে রওনা হন পরীক্ষাকেন্দ্রের দিকে।
এই দৃশ্য শুধু বিস্ময়ের নয়, অনুপ্রেরণারও
শিক্ষক, অভিভাবক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন তার দিকে। মাটি ভেদ করে যেন উঠে আসে এক অদম্য শক্তি। অনেকে বলে, “ইউনুস শুধু পরীক্ষা দিতে আসছে না, সে আমাদের আত্মতৃপ্তিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে।”
শুধু পরীক্ষায় অংশ নেওয়াই নয়, ইউনুস একজন মেধাবী ছাত্রও। পড়াশোনায় বরাবরই মনোযোগী, ক্লাসে সবার আগে পৌঁছান, হোমওয়ার্ক করেন নিখুঁতভাবে। তার চোখে এখন একটিই স্বপ্ন—একদিন একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সমাজে অবহেলিত, প্রতিবন্ধী, পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
ইউনুস আমাদের শেখায়—
সীমাবদ্ধতা নয়, মনোবলই মানুষকে এগিয়ে নেয়।
যে সমাজ সুযোগ দেয়, সেই সমাজেই প্রতিভা বিকশিত হয়।
সহানুভূতির চাইতেও বেশি দরকার সহায়তা ও সমতা।
আমরা প্রায়শই নিজের সমস্যা নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ি, ভেঙে পড়ি সামান্য ঝড়ে। কিন্তু ইউনুসের মতো সাহসী কিশোররা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—চেষ্টা থাকলে পথ তৈরি হবেই।
সমাজের দায়িত্ব
আমরা যদি ইউনুসদের পাশে দাঁড়াই, যদি তাদের জন্য র্যাম্প বানাই, হুইলচেয়ার দিই, বা শুধু একটু সাহস দিই—তাহলেই তারা পৃথিবী জয় করতে পারবে। ইউনুসের মতো অনেকেই আছেন, যারা সুযোগের অপেক্ষায়।