টাঙ্গাইলে সেফটি ট্যাংকে মিলল কলেজ শিক্ষার্থীর লাশ: নৃশংস হত্যাকাণ্ডে স্তব্ধ জনপদ

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা, যা পুরো এলাকাজুড়ে শোক ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে এক কলেজ শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, যেটি শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, বরং সমাজের বর্তমান ভয়াবহ বাস্তবতার নগ্ন প্রতিফলন।

কে ছিলেন নিহত যুবক?

নিহত শিক্ষার্থীর নাম আব্দুল আলীম (১৮)। তিনি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চানতারা গ্রামের বাসিন্দা এবং সৌদি প্রবাসী জহুরুল ইসলামের ছেলে। আলীম কালিহাতীর শাজাহান সিরাজ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
তরুণ, মেধাবী ও ভদ্র হিসেবে এলাকায় তার পরিচিতি ছিল।

কীভাবে উদ্ধার হলো লাশ?

২০২৫ সালের ১৫ এপ্রিল, মঙ্গলবার দুপুরে কালিহাতী পৌরসভার সাতুটিয়া দক্ষিণ পাড়া এলাকার একটি বাড়ির পেছনের সেফটি ট্যাংকে স্থানীয়রা একটি মরদেহ দেখতে পান। দ্রুত খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে। পরে তারা এসে মরদেহ উদ্ধার করে।

হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ কী?

পুলিশ জানায়, মরদেহের পেটে ছুরির আঘাত ছিল এবং গলায় প্লাস্টিক রশি পেঁচানো অবস্থায় পাওয়া গেছে, যা শ্বাসরোধ করে হত্যার স্পষ্ট আলামত। এটি নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং পূর্বপরিকল্পিত ও নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড।

নিখোঁজের প্রেক্ষাপট

আব্দুল আলীম শনিবার সকালে কোচিং ক্লাসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তার পরিবার অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পায়নি। অবশেষে সেই অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো লাশ হিসেবে খুঁজে পাওয়ার মাধ্যমে।

তদন্তের বর্তমান অবস্থা

পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখনও কারা এর সঙ্গে জড়িত তা নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি।


এই ঘটনায় আমাদের ভাববার বিষয় কী?

এই ঘটনা কেবল একটি অপরাধ নয়, এটি আমাদের সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি। একজন তরুণ শিক্ষার্থী, যার সামনে ছিল উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ— তাকে এই নৃশংসভাবে হত্যা করার সাহস কীভাবে জন্ম নেয়? এ প্রশ্ন প্রতিটি সচেতন নাগরিকের হৃদয়ে নাড়া দেয়।

আমাদের উচিত এসব অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা, পরিবার-সমাজ-পুলিশ প্রশাসনের সমন্বয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *