
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কিছু এলাকায় মুসলিম কবরস্থান বা কবরস্থানে কবর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পেছনে মূলত ইসলামোফোবিয়া, অর্থাৎ মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ, ঘৃণা বা ভয় কাজ করেছে। অনেক সময় এই ভাঙচুর ঘৃণামূলক অপরাধ (hate crime) হিসেবে সংঘটিত হয়।
কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা:
১. নর্থ ডাকোটা (২০২২ সাল)
এখানে একটি মুসলিম কবরস্থানে কংক্রিটের কবর ভেঙে ফেলা হয়।
এটা মোটেও দুর্ঘটনা ছিল না, বরং পরিকল্পিতভাবে কবরগুলো ধ্বংস করা হয়।
FBI (যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা) বিষয়টি তদন্ত শুরু করে।
স্থানীয় মুসলিমরা খুব আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, কারণ এটি তাদের ধর্মীয় অনুভূতির ওপর সরাসরি আঘাত।
২. মিনেসোটা (২০১৭ ও ২০২১)
“আল-মাগফিরাহ” নামে একটি মুসলিম কবরস্থানে বারবার হামলা হয়।
একবার কেউ দেয়ালে লিখে দেয়: “Leave, you R dead” (চলে যাও, তুমি মরে গেছো) — এটা এক ধরনের হুমকি।
ঘটনাগুলো দেখায়, কিছু লোক মুসলিমদের কবরস্থান দেখলেই বিরক্ত বা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, যা অসহিষ্ণুতার পরিচয়।
৩. টেক্সাস (২০১৫)
ফার্মারসভিল শহরে মুসলিমদের একটি কবরস্থান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলে, স্থানীয় কিছু মানুষ এর প্রতিবাদ করে।
তারা বলে, এই জায়গায় মুসলিম কবরস্থানের দরকার নেই, কেউ কেউ শূকরের রক্ত ও মাথা ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেয়!
এ ধরনের কর্মকাণ্ড ধর্মীয় বিদ্বেষেরই স্পষ্ট প্রকাশ।
কেন এসব ঘটছে?
অনেকেই এখনও মুসলিমদের ভুলভাবে দেখে, বিশেষ করে যাদের মনে ৯/১১ বা মিডিয়াতে মুসলিমদের নেতিবাচক উপস্থাপনার প্রভাব রয়েছে।
কিছু গোষ্ঠী মনে করে মুসলিমরা এলেই তাদের সংস্কৃতি, জীবনধারা, বা নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে – যা একটি ভ্রান্ত ধারণা।
আবার কিছু লোক ইচ্ছা করেই উত্তেজনা ছড়াতে এমন কাজ করে, যেন বিভাজন সৃষ্টি হয়।
আশার কথা কী?
এসব ঘটনার বিরুদ্ধে বহু আমেরিকান দাঁড়িয়েছে মুসলিমদের পাশে।
বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ একত্র হয়ে কবরস্থানে ফুল দিয়েছে, পরিচ্ছন্ন করেছে, নিন্দা জানিয়েছে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে।
প্রশাসন অনেক সময় কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে এবং দোষীদের আইনের আওতায় এনেছে।