18 Apr 2025, Fri

অতিরিক্ত টাকা না দেওয়ায় ২০২৫ সালে পরীক্ষায় বসতে পারলেন না অনেক শিক্ষার্থী

অতিরিক্ত টাকা না দেওয়ায় ২০২৫ সালে পরীক্ষায় বসতে পারলেন না অনেক শিক্ষার্থী
২০২৫ সালে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাকে ঘিরে দেশের নানা প্রান্ত থেকে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে — বহু শিক্ষার্থী শুধুমাত্র অতিরিক্ত টাকা দিতে না পারায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। এই ঘটনা শুধু দুঃখজনকই নয়, শিক্ষাব্যবস্থার নৈতিক ভিত্তির ওপর এক গভীর আঘাত।
সরকার নির্ধারিত ফি, কিন্তু বিদ্যালয়ের দাবি তার চেয়েও বেশি
সরকার প্রতি বছর পরীক্ষা ফি নির্ধারণ করে দেয়, যেমন বোর্ড ফি, ব্যবহারিক পরীক্ষা ফি ইত্যাদি। কিন্তু বাস্তবে অনেক প্রতিষ্ঠান এই ফি ছাড়াও অতিরিক্ত ১,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত দাবি করে নানা অজুহাতে — উন্নয়ন ফি, ক্লাস ফি, কম্পিউটার ফি, এমনকি “পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা ফি” নামেও!
ঘটনাগুলোর কিছু বাস্তব চিত্র:
১. ময়মনসিংহ (রেনেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়):
শিক্ষার্থীরা সরকারি ফি পরিশোধ করলেও প্রধান শিক্ষক অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। যারা দিতে পারেননি, তাদের প্রবেশপত্র আটকে রাখা হয় এবং পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
২. গাজীপুর (চরদুর্লভ খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ):
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র পাওয়ার আগে বাধ্যতামূলকভাবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়। যারা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, তারা পরীক্ষায় বসতে পারেনি।
৩. শেরপুর (ঘাগড়া ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়):
একজন পরীক্ষার্থী ২,০০০ টাকা জমা দেয়, কিন্তু দাবি করা হয় ৩,০০০ টাকা। মাত্র ১,০০০ টাকা কম দেওয়ায় তাকে পরীক্ষার দিন জানিয়ে দেওয়া হয় — “তুমি পরীক্ষায় বসতে পারবে না।”
এই অনিয়মের প্রভাব কী?
ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে: অনেক শিক্ষার্থী একবছরের পরিশ্রম সত্ত্বেও পরীক্ষার সুযোগ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে।
আত্মবিশ্বাসে চরম আঘাত: দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজেকে ছোট মনে করার প্রবণতা বাড়ছে।
শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য: অর্থনৈতিক সামর্থ্যের ভিত্তিতে শিক্ষার সুযোগ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবস্থান কী?
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অতিরিক্ত ফি আদায় বেআইনি এবং এ ধরনের অভিযোগ পেলেই তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বাস্তবে অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো বেপরোয়া।
আমরা কী করতে পারি?
শিক্ষার্থীদের পক্ষে সরব হওয়া
অভিযোগ দাখিল করা শিক্ষা বোর্ডে বা মন্ত্রণালয়ে
গণমাধ্যমে ঘটনাগুলো তুলে ধরা
সামাজিক মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করা
এই ঘটনা শুধু কিছু শিক্ষার্থীর নয় — এটা পুরো জাতির ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িত। শিক্ষা যেন কারও আর্থিক সামর্থ্যের কাছে হার না মানে, সেটাই আমাদের সবার দায়িত্ব।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *