17 Apr 2025, Thu

ইসরায়েল আরব সম্পর্ক ২০২৫

ইসরায়েলের গাজায় চালানো ভয়াবহ হামলার বিরুদ্ধে যখন বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ চলছে, তখন প্রশ্ন উঠছে—আরব দেশগুলো কী করছে? আশ্চর্যের বিষয়, বেশ কয়েকটি আরব দেশ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ইসরায়েলকে সাহায্য করে চলেছে, যদিও মুখে তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে সুর তুলছে।
১. কূটনৈতিক সম্পর্ক: স্বীকৃতির রাজনীতি
মিশর (১৯৭৯) ও জর্ডান (১৯৯৪) বহু আগেই ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছে।
UAE, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদান ২০২০ সালের আব্রাহাম অ্যাকর্ডস চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
এসব সম্পর্কের মাধ্যমে ইসরায়েল আন্তর্জাতিকভাবে বৈধতা পায় এবং নিজেদের আক্রমণকে “সীমান্ত রক্ষা” হিসেবে প্রচার করতে পারে।
২. অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক চুক্তি: লাভের বাণিজ্য
আরব দেশগুলো ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করছে। কৃষি, প্রযুক্তি, পর্যটন ও বিনিয়োগে যৌথ উদ্যোগে ব্যাপক টাকা লেনদেন হচ্ছে।
বিশেষ করে UAE-এর সঙ্গে ইসরায়েলের শত কোটি ডলারের চুক্তি হয়েছে।
৩. সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা: শত্রুর সঙ্গে বন্ধুত্ব
ইরানকে “সাধারণ শত্রু” মনে করে সৌদি আরব, UAE গোপনে ইসরায়েলের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করছে।
একে বলা হয় “শত্রুর শত্রু—বন্ধু” নীতি, যা ফিলিস্তিন ইস্যুকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে।
৪. জ্বালানি সরবরাহ: তেলের রাজনীতি
SUMED পাইপলাইন নামের এক জ্বালানি পথ ব্যবহার করে সৌদি, কাতার, মিশর, ইরাক ও আমিরাত থেকে ইসরায়েলে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে।
এই জ্বালানি দিয়ে ইসরায়েল সামরিক যান চালায়, বোমা তৈরি করে—যার শিকার হয় গাজার শিশু ও নারী।
৫. মুখে প্রতিবাদ, বাস্তবে দ্বিচারিতা
বিভিন্ন সম্মেলনে আরব নেতারা ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলেন, কিন্তু বাস্তবে ইসরায়েলের সঙ্গে হাত মেলান।
সাধারণ জনগণের মনে প্রশ্ন—এই দ্বিচারিতার শেষ কোথায়?
উপসংহার: নৈতিকতার বিপর্যয়
এই পরিস্থিতি এক প্রকার নৈতিক বিপর্যয়। বন্ধুত্বের মুখোশে শত্রুর হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে। আরব বিশ্ব যদি সত্যিই ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে চায়, তাহলে তাদের কেবল কথায় নয়, কাজেও একতা দেখাতে হবে।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *