Mon - Fri : 10 AM - 5 PM

How

Real Estate gets real

Maecenas posuere sit amet mauris et feugiat. Quisque eu purus tincidunt, ullamcorper odio sed, eleifend lectus.Maecenas bibendum metus gravida quam pretium, sit amet fringilla magna malesuada.

Follow For More Details:

home2

How Real Estate gets real

Maecenas posuere sit amet mauris et feugiat. Quisque eu purus tincidunt, ullamcorper odio sed, eleifend lectus.Maecenas bibendum metus gravida quam pretium, sit amet fringilla magna malesuada.

Follow For More Details:

তিস্তা মহাপরিকল্পনা ২০২৫: একটি স্বপ্নের উন্নয়নযাত্রা

তিস্তা মহাপরিকল্পনা মূলত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, বিশেষ করে রংপুর অঞ্চলকে কেন্দ্র করে তিস্তা নদীকে ঘিরে গড়ে ওঠা একটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প। এটি শুধু একটি নদী খনন বা সেচ প্রকল্প নয়—এটি একটি পূর্ণাঙ্গ নদীভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ।

মূল লক্ষ্য ও পরিকল্পনা:

১. নদী পুনর্খনন ও ব্যবস্থাপনা:
তিস্তা নদীর প্রশস্ততা অনেক জায়গায় ৫-৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে, যেখানে পানির প্রবাহ নেই বললেই চলে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নদীকে একটি গভীর ও নিয়ন্ত্রিত প্রবাহে রূপান্তর করা হবে। এতে বর্ষাকালে বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং শুকনো মৌসুমে পানি সংরক্ষণ সম্ভব হবে।

উন্নয়ন অঞ্চল গড়ে তোলা:
নদীর দুই পাড়ে ১৭০ বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা উদ্ধার করে সেখানে আধুনিক নগরায়ন, অর্থনৈতিক অঞ্চল, শিল্প এলাকা, বিদ্যুৎকেন্দ্র, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল এবং পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।

সেচ সুবিধা ও কৃষির উন্নয়ন:
পরিকল্পনার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো তিস্তা নদীর পানিকে নিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করে উত্তরাঞ্চলের বিশাল কৃষিভিত্তিক এলাকায় সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা।

পর্যটন ও পরিবেশ সংরক্ষণ:
নদীকেন্দ্রিক পর্যটন যেমন নদীকূলে রিসোর্ট, নৌভ্রমণ, ইকো-ট্যুরিজম ইত্যাদি চালু করার পরিকল্পনা আছে। পাশাপাশি, নদীর জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে।

অর্থায়ন ও সহযোগিতা:

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে চীনের সহযোগিতা চাওয়া হয়, যা এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। তবে দেশীয় পর্যায়েও এই প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের দাবি উঠছে। অনেকে মনে করেন, পদ্মা সেতুর মতো এটিও বাংলাদেশ নিজের সক্ষমতায় করতে পারে।

চ্যালেঞ্জ ও সমালোচনা:

ভূ-রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা: চীনের অংশগ্রহণে ভারতের উদ্বেগ রয়েছে, যেহেতু তিস্তা একটি আন্তঃসীমান্ত নদী।

পানি বণ্টন চুক্তি: ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। এই প্রকল্প সেই আলোচনায় প্রভাব ফেলতে পারে।

তিস্তা মহাপরিকল্পনার সম্ভাব্য প্রভাবসমূহ:
১. অর্থনৈতিক রূপান্তর:
উত্তরাঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত মনে করে—তাদের জীবিকা কৃষিনির্ভর, কিন্তু পানির অভাব, খরা, এবং কর্মসংস্থানের সংকটে তারা পিছিয়ে পড়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে:
কৃষিকাজে নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধা মিলবে।
কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র তৈরি হবে, যেখান থেকে স্থানীয় পণ্য সরাসরি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে যাবে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (SMEs) গড়ে উঠবে, যা কর্মসংস্থান বাড়াবে।
২. জলবায়ু ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনা:
নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কমবে।
খরা মোকাবেলায় পানি সংরক্ষণ সম্ভব হবে।
নদীভিত্তিক জীববৈচিত্র্য (মাছ, জলজ উদ্ভিদ, পাখি) রক্ষা পাবে।
৩. আবাসন ও নগরায়ন:
এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে “স্যাটেলাইট শহর” গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে—যেখানে আধুনিক আবাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ব্যবসাকেন্দ্র থাকবে।
এটি রাজধানীমুখী মানুষের চাপও কমাবে।
৪. আন্তঃনদী সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন:
তিস্তার সঙ্গে অন্যান্য নদীর সংযোগ ঘটিয়ে আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন বাড়ানো যাবে। পাশাপাশি নদীর দুই পাড়ে রাস্তা, সেতু ও রেল সংযোগ বাড়বে, যা পণ্য পরিবহন ও পর্যটনে সহায়ক হবে।
ভবিষ্যতের চিত্র কেমন হতে পারে?
ভাবো, ২০৩০ সালে তিস্তা নদী হয়ে উঠছে বাংলাদেশের ‘নদী ভিত্তিক ইকোনমিক করিডোর’।
পাড়ে পাড়ে সাজানো সবুজ কৃষিজমি, শিল্প কারখানা, নদী বেয়ে চলছে ছোট বড় কার্গো জাহাজ, পর্যটকেরা নদীর পাড়ে রিসোর্টে ছুটি কাটাচ্ছে, আর স্থানীয় মানুষ কাজ পাচ্ছে নিজ এলাকায়।
এটাই তিস্তা মহাপরিকল্পনার স্বপ্ন।তবে কিছু সতর্কতাও জরুরি:
প্রকল্প যেন স্থানীয় মানুষকে বাস্তুচ্যুত না করে।
পরিবেশের ক্ষতি যেন না হয়—গাছপালা, মাটি, জলজ প্রাণী রক্ষা করতে হবে।
সবকিছুতে স্থানীয় জনগণের মতামত, অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *