
২০২৫ সালের মানিকগঞ্জের জামাই মেলা ছিল একেবারে জমজমাট আর ঐতিহ্যে ভরা এক ব্যতিক্রমী আয়োজন। এটা শুধু একটা মেলা না—এটা একটা সামাজিক উৎসব, ভালোবাসা, আত্মীয়তার বন্ধন আর রীতিনীতির এক দারুণ প্রকাশ।
মেলার আয়োজন ও সময়
এটি হয় ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের বাঙ্গালা গ্রামে, প্রতিবছর দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে। তবে ২০২৫ সালে রমজান মাসের কারণে মেলাটি হয়েছে ঈদের তিন দিন পর, টানা তিন দিনব্যাপী।
কী হয় এই মেলায়?
প্রথম দিন: জামাই মেলা—এই দিনে মেয়েরা তাদের জামাইদের দাওয়াত করে মেলায় আনে।
দ্বিতীয় দিন: বৌ মেলা—বউয়েরা বেশি উৎসবমুখর থাকেন এই দিনে।
তৃতীয় দিন: সার্বজনীন মেলা—সবাই মিলে উদযাপন করে, বেচাকেনা আর আনন্দে ভরে ওঠে পুরো মাঠ।
জামাইদের আপ্যায়ন ও উপহার
জামাইরা শ্বশুরবাড়ি থেকে মেলা দেখতে এসে:
বড় বড় মাছ, পান-সুপারি, মিষ্টি কিনে নিয়ে যান।
বাড়ি ফিরে গিয়ে হয় বিশাল ভোজ—মাছের ঝোল, বিরিয়ানি, পোলাও, খাসি—সবই থাকে মেনুতে।
শ্বশুরবাড়ি থেকে জামাইদের দেওয়া হয় গরু-মহিষ, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, এমনকি স্বর্ণালঙ্কার পর্যন্ত!
মেলায় কী পাওয়া যায়?
নানা ধরনের মাছ: বাঘাইর, বোয়াল, চিতল, কাতলা, আইড় ইত্যাদি—ওজন ২ কেজি থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত!
হস্তশিল্প, বাঁশ-বেতের সামগ্রী, খেলনা, জামাকাপড়, কসমেটিকস, মিষ্টি—আরো কত কিছু!
শিশুদের জন্য নাগরদোলা, জাম্পার, গেমস।
এছাড়া, দৌড় প্রতিযোগিতাও হয়, যেখানে বিজয়ীরা পায় আকর্ষণীয় পুরস্কার।
এই মেলার বিশেষত্ব কী?
এই মেলা শুধু কেনাবেচা বা ভোজনের না—এটা পারিবারিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করার একটি উৎসব। জামাই আর শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়তার মধ্যে হাসি, খুশি আর উপহারের মাধ্যমে একটা বন্ধন তৈরি হয়, যেটা আর কোনো মেলায় দেখা যায় না।