Mon - Fri : 10 AM - 5 PM

How

Real Estate gets real

Maecenas posuere sit amet mauris et feugiat. Quisque eu purus tincidunt, ullamcorper odio sed, eleifend lectus.Maecenas bibendum metus gravida quam pretium, sit amet fringilla magna malesuada.

Follow For More Details:

home2

How Real Estate gets real

Maecenas posuere sit amet mauris et feugiat. Quisque eu purus tincidunt, ullamcorper odio sed, eleifend lectus.Maecenas bibendum metus gravida quam pretium, sit amet fringilla magna malesuada.

Follow For More Details:

সেন্টমার্টিন: স্বপ্নের প্রবাল দ্বীপ(A-Z)

বাংলাদেশের মানচিত্রের একদম দক্ষিণে, বঙ্গোপসাগরের বুকের ওপরে জেগে থাকা এক স্বর্গীয় ভূমি—সেন্টমার্টিন দ্বীপ। এটি দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক বিস্ময়। বালুকাময় সৈকত, স্বচ্ছ নীল জলরাশি, দিগন্তজোড়া নারকেল গাছ, আর শান্ত পরিবেশ মিলে সেন্টমার্টিনকে করে তুলেছে এক অনন্য স্বর্গভূমি। যারা প্রকৃতিকে ভালোবাসেন, সাগরের ঢেউয়ের শব্দে হারিয়ে যেতে চান, তারা একবার সেন্টমার্টিনে গেলে এর প্রেমে পড়ে যাবেন।

দ্বীপের পরিচিতি ও ভৌগোলিক অবস্থান:

সেন্টমার্টিন দ্বীপটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফের দক্ষিণে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আয়তনে ছোট এই দ্বীপটি মাত্র ৮ বর্গকিলোমিটার, তবে জোয়ার-ভাটার কারণে এর আকার পরিবর্তিত হয়। এটি মিয়ানমারের সামুদ্রিক সীমান্তের খুব কাছাকাছি অবস্থিত এবং একে স্থানীয়ভাবে "নারকেল জিঞ্জিরা" নামেও ডাকা হয়। কারণ এখানে প্রচুর নারকেল গাছ রয়েছে, যা দ্বীপের শোভা আরও বাড়িয়ে দেয়।

দ্বীপের সৌন্দর্য ও আকর্ষণীয় স্থান :

১. নীল সমুদ্র ও সাদা বালুর সৈকত

সেন্টমার্টিনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলো এর স্ফটিকস্বচ্ছ নীল পানি ও সাদা বালির সৈকত। এখানে দাঁড়িয়ে দেখলে মনে হবে, যেন পুরো সাগরটা এক বিশাল আয়নার মতো চিকচিক করছে। বিশেষ করে, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সৈকতের রঙ বদলে এক অনন্য দৃশ্য তৈরি করে।

২. ছেঁড়া দ্বীপ: স্বর্গের আরেক অংশ

সেন্টমার্টিনের দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে একটি ছোট্ট বিচ্ছিন্ন অংশ, যার নাম ছেঁড়া দ্বীপ। এটি মূল দ্বীপ থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে এবং এখানে রয়েছে প্রচুর প্রবাল ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য। ছেঁড়া দ্বীপের চারপাশের নীলচে-সবুজ পানি এতটাই স্বচ্ছ যে নীচের প্রবাল, মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী স্পষ্ট দেখা যায়।

৩. প্রবাল ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য

সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ হওয়ায় এখানে রঙিন প্রবাল, শৈবাল, সামুদ্রিক মাছ, কচ্ছপ, শামুক-ঝিনুক ও ডলফিন দেখতে পাওয়া যায়। তবে দুঃখজনকভাবে, অতিরিক্ত পর্যটনের কারণে এখানকার প্রবাল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই প্রবাল সংরক্ষণে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।

৪. তারাভরা রাত: স্টার গেজিং স্বর্গ

কীভাবে যাবেন সেন্টমার্টিন দ্বীপে?
ঢাকা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত:
১. ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী বাস বা ফ্লাইটে কক্সবাজার যেতে হবে।
২. কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত যেতে হবে বাস বা মাইক্রোবাসে (প্রায় ২-৩ ঘণ্টা)।
টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন:
৩. প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে টেকনাফের জেটি থেকে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ, ট্রলার বা স্পিডবোট ছেড়ে যায়। জনপ্রিয় জাহাজগুলোর মধ্যে আছে—
কেয়ারি সিন্দাবাদ
কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন
লাবিবা ক্রুজ
ফরহান ক্রুজ
জাহাজে সময় লাগে ২-৩ ঘণ্টা, স্পিডবোটে গেলে সময় কম লাগে কিন্তু বেশি খরচ হয়।
সেন্টমার্টিনে থাকার ব্যবস্থা
দ্বীপে বেশ কয়েকটি রিসোর্ট ও হোটেল রয়েছে, যেখানে পর্যটকরা থাকতে পারেন। কিছু জনপ্রিয় রিসোর্ট হলো—
ব্লু মারিন রিসোর্ট
সি পার্ল বিচ রিসোর্ট
প্যারাডাইস রিসোর্ট
প্রবাল রিসোর্ট
সাধারণত শীতকালে পর্যটকদের চাপ বেশি থাকে, তাই আগেভাগে বুকিং করে নেওয়াই ভালো।

সেন্টমার্টিন ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
নভেম্বর থেকে মার্চ: এই সময়টাতে আবহাওয়া সুন্দর থাকে, সমুদ্র শান্ত থাকে, আর দ্বীপের প্রকৃতি একদম প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
বর্ষাকালে (জুন-সেপ্টেম্বর) সমুদ্র উত্তাল থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকে এবং ভ্রমণ নিরাপদ নয়।
সেন্টমার্টিনের খাবার ও বিশেষত্ব
সেন্টমার্টিনের খাবার মানেই টাটকা সামুদ্রিক মাছ, লবস্টার, কাঁকড়া, চিংড়ি ও নারকেলভিত্তিক খাবার। কিছু জনপ্রিয় খাবার হলো—
গ্রিলড লবস্টার
সামুদ্রিক মাছের ভুনা
নারকেলের শরবত
ঝিনুক ভর্তা
করণীয় ও সতর্কতা
✅ পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন, প্লাস্টিক বা পলিথিন ফেলবেন না।
✅ প্রবাল ভাঙবেন না বা তুলে নিয়ে আসবেন না।
✅ সাগরে নামলে সাবধানে থাকুন, কারণ কিছু জায়গায় স্রোত তীব্র হতে পারে।
✅ বিদ্যুৎ সরবরাহ সবসময় থাকে না, তাই পাওয়ার ব্যাঙ্ক ও টর্চ সঙ্গে রাখুন।

সেন্টমার্টিন শুধু একটি ভ্রমণ গন্তব্য নয়, এটি প্রকৃতির এক দুর্লভ রত্ন। সাগরের নীল জলরাশি, প্রবালের মায়াবী সৌন্দর্য, তারাভরা রাতের আকাশ, আর নির্জন সৈকত মিলে এক স্বপ্নরাজ্য তৈরি করেছে। এই দ্বীপ শুধু চোখে দেখার নয়, অনুভব করারও।
যদি আপনি প্রকৃতির সৌন্দর্য ভালোবাসেন, সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দে মুগ্ধ হতে চান, আর নির্জনতার মাঝে এক টুকরো স্বর্গ খুঁজে পেতে চান—তাহলে সেন্টমার্টিন হবে আপনার জন্য আদর্শ গন্তব্য!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *